অংশগ্রহণমূলক কাজ ১৩

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪) - বৌদ্ধধর্ম শিক্ষা - বিনয় পিটক | NCTB BOOK

বিনয়পিটক বিষয়ে একটি কনসেপ্ট ম্যাপিং কর।

কনসেপ্ট ম্যাপিং এ বিনয়পিটকের ভাগ, পুস্তকসমূহের সংখ্যা ও নাম এবং প্রত্যেকটি পুস্তকে নির্দেশিত একটি করে শিক্ষণীয় উপদেশ লিখ ছকাকারে লেখ

কনসেপ্ট ম্যাপিং ছক

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

** এই পৃষ্ঠায় জায়গা না হলে একটি আলাদা কাগজে লিখে কাগজটি বইয়ের পৃষ্ঠার এক পাশে আঠা দিয়ে যুক্ত করতে পারি/খাতায় লিখতে পারি।

 

বিনয় পিটকের গুরুত্ব

 

জীবজগতের প্রত্যেকটি বিষয়ের স্বতন্ত্র নীতি আছে। আকাশে রাতে চাঁদ এবং দিনে সূর্য- এটি প্রকৃতির নিয়ম। কোন বৃক্ষ কত বছরে ফল দেবে সেটি বৃক্ষের নিয়ম। এ নিয়মের ব্যত্যয় হলেই উদ্ভব হয় সমস্যার। তথাগত বুদ্ধ তাঁর কার্য-কারণ তত্ত্বে বলেছেন, প্রত্যেকের আজকের কর্মই তার ভবিষ্যতের ফল। অর্থাৎ, যে যেরকম কাজ করবে, সে অনুযায়ী ফল ভোগ করবে। সুতরাং নিজের ভবিষ্যতকে দুঃখ ও কষ্টমুক্ত করতে হলে আমার আজকের কর্ম হতে হবে নীতিসম্পন্ন ও আদর্শিক। এই নীতি আদর্শ হঠাৎ করে আচরণ সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন চর্চা। কিন্তু কোনো বিধিবদ্ধ বা বাধ্যবাধকতার সাথে সম্পৃক্ত না হলে চর্চা দীর্ঘস্থায়ী করা কঠিন হয়। তথাগত বুদ্ধ সর্বসত্তার কল্যাণের জন্য তাঁর মঙ্গলবাণী প্রচার করলেও তিনি বিধিবদ্ধ নীতিমালা সকলের জন্য করেননি। শুধু ভিক্ষু-শ্রামণদের জন্য প্রবর্তন করেছেন নির্দিষ্ট বিধিবদ্ধ বিনয় শিক্ষা। যা ত্রিপিটকের বিনয় পিটকে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এই বিনয় নীতি অনুশীলনের কারণে বৌদ্ধ ভিক্ষুসংঘ সর্বদা সৌম্য, শান্ত ও মৈত্রীপরায়ণ হয়।

 

বিনয় পিটকের নির্দেশনা প্রত্যেক ভিক্ষুর জন্য আবশ্যিক পালনীয় রীতি। এর কারণেই ভিক্ষুসংঘে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও মৈত্রীবোধ অটুট থাকে। এতে পারস্পরিক দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধও বৃদ্ধি পায়। চিত্তে শান্তি বিরাজ করে। নীতি অনুশীলনকারী ব্যক্তি কর্মে যেমন নীতিবান হয়, তেমনি তাঁর অন্তর হতে হিংসা ও বিদ্বেষ দূর হয়। এতে চিত্তের বিতর্ক ও দ্বন্দ্বভাবও দূর হয়।

 

তথাগত বুদ্ধ বিনয় পিটকে বিধি-বিধান গুলো এমন ভাবে বিন্যাস করেছেন যে এগুলো অনুশীলনের মাধ্যমে শুধু আচরণগত উন্নয়ন নয়, অন্তর্হগৎও মৈত্রী, করুণায় স্নাত হবে। আমাদের সকল দ্বন্দ্বের মূল-তৃষ্ণা। এই তৃষ্ণার কারণেই হিংসা ও অহংভাবের উদয়। যার জন্য সত্য ও বাস্তবতাকে উপলব্ধি করা যায় না। এমনকি চিরসত্য অনিত্যকেও বুঝতে পারিনা। তাই, বুদ্ধ বিনয় নীতিকে এমনভাবে বর্ণনা করেছেন যে এই বিধিবদ্ধ বিনয় যথার্থ অনুসরণ করলেই মানুষ নিজেকে অমূল্য সম্পদে পরিণত করতে পারবেন। সেই সাথে সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতি বিরাজিত হবে। জগত হবে প্রশান্তিময়। তাই বিনয় পিটকের গুরুত্ব অপরিসীম।

তথাগত বুদ্ধ এই বিনয় পিটক বৌদ্ধ ভিক্ষুসংঘের জন্য প্রবর্তন করলেও সাধারণ মানুষের এতে অনেক কিছু শেখার আছে। এই শিক্ষণীয় বিষয়গুলো আমরা যত বেশি উপলব্ধি করতে সমর্থ হবো, ততই আমাদের মঙ্গল। সমাজ ও দেশের জন্য হবে মঙ্গলময়।

Content added || updated By
Promotion